Wanderlust (ভ্রমণের নেশা) - মহেশখালী

in BDCommunity4 years ago

ঘুরতে কার না ভালো লাগে। আমার একটু বেশিই ভালো লাগে। এজন্য ছোটবেলা থেকে কোন কারনে মন খারাপ হলে কিংবা রাগ-অভিমান করলে, বাবা আমার রাগ ভাঙাতে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতেন।

সেই উচ্ছ্বাস আমার মাঝে এখনো রয়ে গেছে। সুযোগ পেলেই ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার আবদার করি.. প্রাইভেট পড়ার নাম করে হোস্টেল থেকে বের হয় বান্ধবীরা ঘুরতে চলে যাই... আরও কত কি!

আমার দুলাভাই একটি কলেজের প্রভাষক। উনার জন্মস্থান মহেশখালীর এক প্রান্তে, ধলঘাটা। কিন্তু এখন উনাদের গ্রামের বাড়ি অবশিষ্ট নেই। শুনেছি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। উনারা এখন চকোরিয়া থাকেন। এখানেই সেটেল্ড। ফলে মহেশখালী কখনো যাওয়া হয়নি আমাদের।

দুলাভাইকে অনেকদিন ধরে বলছি উনার গ্রামে নিয়ে যেতে, এমনকি বাস্তুহারা বলেও খোচা দিচ্ছি। উদ্দেশ্য হল যাতে রাগ করে হলেও একবার মহেশখালী নিয়ে যায়। আর এই উসিলায় আমার একটা নতুন এলাকায় ভ্রমণের সুযোগ হয়।

অবশেষে ওষুধে কাজ হল। দুলাভাই এক ভ্যাকেশনে আমাদের নিয়ে যান মহেশখালী। সে এক দুর্দান্ত যাত্রা। আমরা একটা সিএনজি নিয়ে রওনা দিলাম। সেদিন আবহাওয়া ছিল চমৎকার। স্নিগ্ধ বাতাস বইছে। তাই বেশি এঞ্জয় করেছি।
20200709_074243.jpg

20200709_073328.jpg

গিয়ে দেখি একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল। ওখানে এখনো নাকি চর দখল নিয়ে মারামারিতে দিনে দুপুরে মানুষ খুন হয়। এখনো ডাকাতের উৎপাত শুরু হয় মধ্যরাতে। শুনে গায়ে কাটা দেয়।

একেবারে পিওর গ্রাম। মেঠো রাস্তা। মাটি কিংবা বাঁশের বাড়িঘর। প্রাকৃতিক পরিবেশ। দেখলাম ভাইয়াকে গ্রামের মানুষজন বেশ সম্মান করে। প্রফেসর সাব বলে ডাকে।

আমাদেরকে গ্রামের মানুষ খুব খাতির যত্ন করল। আমরা উঠেছিলাম দুলাভাইয়ের এক চাচির বাসায়। তারা যথাসাধ্য আপ্যায়ন করেছে। গাছ থেকে নারকেল পেরে খাইয়েছেন। তাদের আন্তরিকতা দেখে আমি অভিভূত।
20190817_163725.jpg

20190817_163733.jpg

20200709_073141.jpg

এখানে মহেশখালী কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে। সে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। একরের পর একর জায়গা নিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। দেখে ভালো লাগলো।

এছাড়াও দেখেছি বিশাল বিশাল জায়গা জুড়ে মাছের প্রজেক্ট এর ঘোনা। পানি আমার এমনিতেই ভালো লাগে। জলের কাছে গেলে মনে হয় আমাদের অন্তর যেন জলের মত টলমল করে।

20200709_074141.jpg

তবে যে কারনে সেই ট্যুর আমার জন্য বেশি স্মরণীয় হতে আছে, সেটা হল ভ্রমনের একেবারে শেষ দৃশ্য। আমরা যখন ফিরে আসছি, মেঠো পিচ্ছিল পথে স্লিপ খেয়ে আমি চিৎপটাং!
20200709_073253.jpg

20200709_074315.jpg

যতটা না ব্যাথা পেয়েছি, তারচে বেশি লজ্জা আর বিব্রত হয়েছি। একদিনের ট্যুর বলে কাপড় নিয়ে আসি নি। এদিকে আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার আগেই রওনা দিতে হবে। আগেই বলেছি, জায়গাটা খুব একটা এখনো নিরাপদ নয়। তাড়াহু়রো করে কোনরকম ধুয়ে সেই ভেজা কাপড় নিয়েই রওনা দিলাম।

এভাবেই সমাপ্ত হল একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতার। আপাতত দুলাভাইকে নতুন একটা ভ্রমনের জন্য প্ররোচিত করতেছি। দেখা যাক, কাজ হয় কি না।

20200709_073218.jpg

20190817_170232.jpg

Sort:  

Congratulations @tasri! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You received more than 50 upvotes. Your next target is to reach 100 upvotes.

You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

To support your work, I also upvoted your post!

Do not miss the last post from @hivebuzz:

Introducing the HiveBuzz API for applications and websites
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!

শুধু নাম শুনেছি । কখনো যাওয়া হয় নিই।

যেতে পারেন। ভাল লাগবে। সুন্দর জায়গা।

আমার তো আপনার মত নাই কোন দুলা ভাই আর না আছে শালী 😛

তারপরেও যেতে হবে।।

না থাকুক দুলাভাই
কিংবা শালী
তবু ঘুরে আসুন
মহেশখালী

তবে যখন বলেছে
ভাইয়ের শালী
তবে তো ঘুরে আসতেই হবে
মহেশখালী

খুশিতে হাতে তালি

যদি সঙ্গী থাকে ভাইয়ের শালী 😍

সুন্দর ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা।

ধন্যবাদ

শুভ সকাল
পোস্টটা পড়ে ভালো লাগলো।শেষের যে মেঠোপথের ছবিটা দিয়েছেন তা অনবদ্য।মানুষের পায়ের ছাপ সবখানেই রয়ে যায়।

পদচিহ্ন গুলো মুছে যায় কালের বর্ষায়.. শুধু মাটি মনে রাখে..

আপু মহেশখালীর পান খেয়েছিলেন তো।

আমার পান খেতে ভালো লাগে না। কেমন বমি বমি লাগে।