করোনা-কাল ও বিশ্ব শিক্ষাব্যবস্থা

in BDCommunity4 years ago (edited)

images (4).jpeg

করোনা-কাল

দীর্ঘদিন থেকে ঘরবন্দি মানুষ। করোনা এক ঝড়ো বাতাসের মত পাল্টে দিয়েছে আমাদের সবার জীবনযাত্রা। এসময় সারা বিশ্বে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় খুবই নেগেটিভ প্রভাব ফেলেছে কভিড19 তথা করোনা ভাইরাস।

images (1).jpeg

কয়ারেন্টেন এবং লকডাউনের এই গৃহবন্দী সময়, মাস্ক-গ্লাভসের এই ভিন্ন জীবনই যেন নতুন এক স্বাভাবিকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে সাবধানতা অবলম্বন করে সীমিত পরিসরে অফিসসমূহ খোলা থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে মার্চ থেকে।

অস্থায়ী বিভিন্ন উপায়ে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে পুরো পৃথিবীতে।


images (2).jpeg

অনলাইন ট্রান্সফর্ম

করোনা কারনে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের স্কুল কলেজ গুলো বন্ধ আছে। বিকল্প হিসেবে তারা অনলাইন পাঠদানের দিকে ঝুঁকেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন নিয়মিত প্রাইমারি অ্যান্ড সেকেন্ডারি লেভেলের ক্লাস সম্প্রচার করছে।

বর্তমানে উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে জুম অ্যাপের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষা কার্যক্রম এর মাধ্যমে চালাচ্ছে। অফিসের বিভিন্ন মিটিং থেকে শুরু করে সরাসরি ক্লাস নেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জুমের ব্যবহার হঠাৎ করে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।

images (5).jpeg

মূলত জুমের কিছু ফিচার যা ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং ব্যবহার একেবারে সহজ সেই কারণেই এত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে এদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত অনলাইন কার্যক্রম চালু করতে পারেনি প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং কারিগরি সুবিধা না থাকার কারণে।

যদিও ইউজিসি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তবুও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনও অনলাইনভিত্তিক পাঠদান পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।


পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা

অনলাইনে ক্লাস শুরু করা হলেও পরীক্ষা কিংবা গ্রেডিং এর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। দেশ এবং দেশের বাইরে অনেক স্কুল কিছু কুইজ ও multiple-choice এর মাধ্যমে পরীক্ষা নিচ্ছে। আবার অনেকেই অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস এসেসমেন্ট করছে, কিন্তু এর কার্যকারিতা এবং সফলতা সম্পর্কে এখনও সন্দেহ রয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা গবেষণাপত্র ও রিসার্চভিত্তিক পেপার তৈরিতে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। তারা ওপেন বুক এক্সাম এর দিকে যাচ্ছে। যেহেতু অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিতে স্বচ্ছতার ও সিস্টেমএর কার্যকারিতার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

images (3).jpeg

আর ব্যবহারিক ও হাতে কলমে ক্লাস কিংবা অ্যাসেসমেন্টেরন্টের বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে জুমের ব্রেকডাউন রুম রয়েছে যেখানে শিক্ষকগণ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এতে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে মনোযোগী হয়। আর শিক্ষকরাও বিভিন্ন অ্যাসেসমেন্ট সহজেই করতে পারে। এটি এখন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে ব্যবহার করা হচ্ছে এখন পর্যন্ত।


বিশ্ব পরিস্থিতি

সারা বিশ্বে যেসব দেশেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে দিয়েছে তারাই পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। আমাদের দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার লাখ লাখ শিক্ষার্থী।

images (6).jpeg

ইউনেস্কো কর্তৃক পরিচালিত একটি সার্ভে দেখা গিয়েছে ৮৪টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশ পরীক্ষা পিছিয়েছে বা স্থগিত করেছে, ১১টি দেশ বাতিল করেছে, ২৩টি দেশ বিকল্প পদ্ধতি অবলবন করেছে আর ২২টি দেশ পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

এর বাইরে প্রায় সকল দেশই এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম এবং ফরেন স্টুডেন্ট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম আপাতত স্থগিত করেছে। এতে অনিশ্চয়তার মাঝে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী।


করনীয়

যেহেতু এই সিচুয়েশন কতদিন থাকবে তা আমরা বলতে পারছি না, তাই আমাদের যে বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা আছে সেটি নিয়ে এখন ভাবা উচিত। এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো নিয়ে আরো দীর্ঘ চিন্তাভাবনা করে কিভাবে তার সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক কার্যকর উপায় বের করা যায় সে দিকে নজর দেওয়া উচিত।