আমাদের সমস্যা হলো, আমরা সত্য ঘটনা দ্বারা যতটা মোটিভেটেড হই.. গুজব কিংবা মিথ্যা দ্বারা তার চেয়েও বেশি হই। অনেক সময় আমরা আসল ঘটনা না শুনে গুজবের পেছনে দৌড়াই..
image source
লবণের দাম বেড়ে যাবে শুনে লবণ কিনে লবণ কিনে স্তুপ করি.. বাশের পানি খেলে রোগ সেরে যাবে শুনে সমানে বাঁশ গাছ কাটা শুরু করি.. লাল পয়সার অনেক দাম শুনে ০১ টাকার কয়েন ১০০ টাকা দিয়ে কিনে বসে থাকি.. এগুলো নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া আমাদের দেশের কিছু বাস্তব ঘটনা।
এরকম অসংখ্য ঘটনা গ্রামে-গঞ্জে শহরে অহরহ ঘটছে সম্ভবত এই জন্যই আমাদেরকে বলা হয় হুজুগে বাঙালি..
হুজুগের পিছনে ছোটা এই স্বভাবটা আধুনিক সময়ে এসে বদলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বভাবটা তো বদলায় নি, বরং যেন আরো জেকে বসেছে!
এখন সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এত বেশি গুজব আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, আসল ঘটনা না জেনে আমরা গুজব নিয়ে মেতে উঠি।
আমরা গুজব নিয়ে অন্যের সাথে তর্ক করি। অন্ধের মতো ছুটতে থাকি। যেন আমরা একটা পিঁপড়ে সমাজে বসবাস করছি। সামনের পিঁপড়ে যে দিকে যায়, পিছনের পিঁপড়েও সে দিকে যায়।
আমরাও ঠিক তেমনি একজন দিকে ছুটছে, সবাই সেদিকেই ছুটছি। নিজস্ব বিবেক-বুদ্ধি বোধ কাজে লাগাচ্ছি না। শামসুর রাহমানের কবিতার কথা মনে পড়ে যায়। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে সবাই চিলের পিছনে ছুটছে..
এই হুজুগে বাঙ্গাল নিয়ে একটা রম্য ছড়া লিখলাম। যদিও ঘটনা কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে মিলিয়ে দেখুন। অনেক মিল খুঁজে পাবেন।
image source
হুজুগের এই যুগে
এই যাহ, পালিয়ে গেল! ওই তো পালায় চোর
ধরতে হবে চোর বেটাকে, সবাই ছুটে দৌড়।
চোর, চোর.. ডাক পড়ে যায় এথায় ওথায় সবখানে এবার তার আর রক্ষা নেই, ধরব তাকে প্রাণপণে।
দালান থেকে নেমে এসে সাহেবরা সব রাস্তায়
ধরে ছিলাম.. এই পালালো.. সবাই কেবল পস্তায়।
ভিখারি এক বললো তখন ফোকলা দাঁতে হেসে
কোথায় গেল চোরটা, আগে দেখই না- কে সে?
-তাই তো! তখন কে চেঁচালো, বলি কোথায় গেলে?
সামনে এসে লোকটা তখন কাঁপতে কাঁপতে বলে:
-আমার বাবু দোষটা কোথায়, তোমরাই তো সব
আসল কথা না শুনে সবাই হাঁকলে যত রব!
পাজি বেড়াল পালিয়ে গেল কৈ ভাজাটা নিয়ে
সেটা দেখেই চোর চেঁচালাম বিড়াল ধরতে গিয়ে।
এ্যা, ব্যাটা বলে কি! চোর তাহলে বেড়াল!
লজ্জাতে সব সাহেব-বাবু মুখ করল আড়াল।
আমি কাব্য। সাহিত্য চর্চা করি। কবিতা আমার রক্তে মিশে আছে..
কবিতা এবং কবিতা বিষয়ক লেখা পেতে সাথে থাকুন: @bdkabbo