রবীন্দ্রনাথের আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে.. গানটা যখন শুনি.. তখন মনের ক্যানভাসে একটি ছবি ফুটে ওঠে.. একটা সুন্দর শান্ত রঙ্গিন বন.. জ্যোৎস্নার আলোয় উদ্ভাসিত.. আলোকিত...
আমার কখনো গভীর রাতে বনে গিয়ে থাকার অভিজ্ঞতা হয় নি.. তবে ইচ্ছা আছে.. বিশেষ করে এই গানটি যতবারই শুনি.. মনে মনে প্লান করি- জীবনে যদি কখনো সুযোগ আসে.. একবার অন্তত একটা রাত বনে কাটাবো.. ক্যাম্পইং করব তাবু টাঙ্গিয়ে..
জোসনা রাতে পাহাড় বন জঙ্গল কেমন লাগবে? যদি অভিজ্ঞতা নেই, কল্পনা থেকেই বলতে পারি.. খুব ভীতিকর.. শুনশান নিরবতার মাঝে কিছু অদ্ভুত শব্দ.. আকাশে মেঘের ঘনঘটা.. রুপালি জোসনা.. একটা অদ্ভুত মায়াজাল তৈরি হবে। মনে হবে যেন অন্য একটা জগত!
কল্পনার জগতটাকে ক্যানভাসে আঁকার চেষ্টা করলাম.. কল্পনার চিত্রগুলি সবসময় রঙ্গিন হয়। বাস্তবে হয়তো জঙ্গল কখনো এত সুন্দর, কালারফুল হবে না.. জুরাসিক পার্ক-এর মত রংবেরঙের গাছপালা থাকবে না।
আমি সাধারণত ছবি আঁকার জন্য জলরঙ ব্যবহার করে থাকি.. তবে এবার একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলাম। জলরং-এর সাথে ফ্লোরোসেন্ট ফেব্রিক্স কালার মিক্স করে আঁকার চেষ্টা করেছি। ফ্লোরোসেন্ট কালারের বৈশিষ্ট্য হলো.. স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী আলো প্রতিফলন করে। যার ফলে বস্তু অনেক উজ্জ্বল দেখায়। স্বাভাবিকভাবে জলরং একটু অনুজ্জ্বল হয়ে থাকে। জলরং এর সাথে ফ্লুরোসেন্ট মিক্স করে ভালই ফলাফল পেয়েছি.. রঙ গুলো খুব সুন্দর জ্বলজ্বল করছে.. ঠিক যেমনটি কল্পনার বন-জঙ্গল করে..
ছবিটি আঁকতে ব্যবহার করেছি:
- জলরং
- ফ্লোরোসেন্ট কালার
- তুলি (৪ নাম্বার সাধারণ, ৮ নাম্বর ফ্ল্যাট)
- পানি
- কার্টিজ কাগজ (200gsm)
- ফ্রেম বোর্ড
নিচে আমার অংকন পদ্ধতি ধাপে ধাপে দেখালাম।
ছবিটি আঁকতে ৩০ মিনিট সময় লেগেছে.. এমনিতে আমার ধৈর্য খুব কম.. তাই খুব নিখুঁতভাবে আঁকার চেষ্টা করি না.. বরং রং নিয়ে খেলতে ভালোবাসি। আর খেলতে খেলতে চিত্রগুলো দাঁড়িয়ে যায়.. কখনো সুন্দর হয়.. কখনো হয়না..