পৃথিবী যেন একটা জংশন.. আর আমরা সবাই ট্রেনের অপেক্ষায় বসে আছি.. শেষ ট্রেনটা পৌঁছালেই আমরা চলে যাব অন্য কোন স্টেশনে..
মধ্যখানের এই সময়টাতে আমরা কেউ সিট দখল করে বসে আছি.. কেউ পায়চারি করছি.. কেউ ফেরি করছে.. কেউ ভিক্ষা করছে.. আবার কেউবা চুরির পায়তারা করছে..
তারপরে একদিন শেষ ট্রেন টা আসবে.. আমরা যার যার মত উঠে যাব নিজস্ব বগিতে.. চলে যাব অন্য কোন জগতে..
এই রূপক অর্থ নিয়ে একটি কবিতা লিখলাম: জৈন্তাপুর জংশন নামে.. একবার পড়েই দেখেন.. হয়তো নিজের সাথে মিল খুঁজে পাবেন কবিতার..
জৈন্তাপুর জংশন
যে ট্রেনটি আসার কথা, আসেনি..
বসে আছি প্লাটফর্মে.. অগুনিত মানুষের মাঝে- একা!
কফির পেয়ালা হাতে.. বসে আছি শূন্য দৃষ্টি নিয়ে।
কফিটুকু জুড়িয়ে গেছে। একটানা প্রতীক্ষিত চোখ জোড়া
হয়ে গেছে কফির মত.. ঠান্ডা, শীতল।
কিছুক্ষণ পর পর লাইনম্যানের পৌঢ় লোকটি এসে
নেড়ে যায় সবুজ পতাকা। আড়মোড়া ভেঙে লোকে
গলা উঁচু করে তাকায়, এই বুঝি ট্রেন এলো?
খাড়া কানে আতিপাতি করে তারা খোঁজে
হুইসেলের ধূসর শব্দ। ব্যর্থ হয়ে মিথ্যাবাদী রাখালের মতো
গাল দেয় লোকটিকে- শালা বাইঞ্চোত!
তারপর হাঁটুতে মুখ গুঁজে আবার ঝিমুনি আসে..
ফেরীঅলা ছেলেটা জীবনের নীরবতা ভেঙ্গে
ডেকে ওঠে- চা গরমমম..
তার ত্রস্ত পদক্ষেপ যেন বাঘ-তাড়া হরিণের কথা
মনে করিয়ে দেয়- বাঁচার বাসনায় ছুটছে..
যেখানে বসে আছি.. পলেস্তারা খসে খসে পড়া
জীর্ণ দেয়ালের কোনে, শুয়ে আছে সেখানে এক বিধ্বস্ত পতিতা..
অঘোরে ঘুমোচ্ছে..
একটি অবোধ শিশু চুষছে পতিতার ঢলে পড়া স্তন।
সেদিকে তাকাতেই আমার দুচোখ ঝলসে গেলো..
দেখি- স্তন জুড়ে বিগত রাতের ক্ষত!
কোন কামুকের নখ ও দাঁতের চিহ্ন লেগে আছে..
সেই দাগ ও দাহ আঁকড়ে ধরে চোঁ চোঁ করে চুষতেসে
শিশু শূন্য বাট.. ক্ষুধা ও কামনার লড়াই..